Healty heart happy feet

Healthy Heart Happy Life Organization (HeLO)

হেলদি হার্ট হ্যাপি লাইফ অর্গানাইজেশন (হেলো)

Charity, Awareness & Research For Humanity

Tips Details

  • Home
  • /
  • HeLO tips
  • /
  • Health Tips
  • /
  • হেলো স্বাস্থ্য টিপসঃ ৩

হেলো স্বাস্থ্য টিপসঃ ৩


সর্প-দংশন: বাংলাদেশ প্রেক্ষিত

(প্রথম পর্ব)

 

সর্পদংশন বাংলাদেশের একটি জরুরী জনস্বাস্থ্য সমস্যা, যা চিকিৎসা যোগ্য এবং সর্বোপরি নিবারণযোগ্য। বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান এবং পরিবেশ সাপ এবং মানুষ উভয়ের পারষ্পরিক অবস্থানের জন্য অত্যন্ত অনুকূল। সর্পদংশন আমাদের প্রান্তিক দরিদ্র কৃষিজীবী সম্প্রদায়ের জন্য একটি পেশাগত স্বাস্থ্য সমস্যা। সাম্প্রতিক কালে দেখা গেছে, এটি প্রাকৃতিক বিপর্যয় বিশেষ করে বন্যার সাথেও সম্পর্কিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রাক্কলন অনুযায়ী বিষধর সাপের কামড়ে বিশ্বে প্রতি বৎসর প্রায় ৮১ হাজার থেকে ১ লক্ষ ৩৮ হাজার মানুষ মারা যান এবং প্রায় ৪ লক্ষ মানুষ স্থায়ীভাবে পঙ্গুত্ব বা শারীরিক বিকৃতির শিকার হন। বহু সমাজে এই সকল মানুষ সামাজিক বৈষম্যের শিকার হন বা সমাজ থেকে বিতাড়িত হন। এর ফলে তাদের আয় কমে যায়, ঋণ বাড়ে, মানসিক সমস্যার সৃষ্টি হয়, যার ফলে জীবন যাপনের মান কমে যায়।

 

দেশব্যাপী পরিচালিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে প্রতি বৎসর বাংলাদেশে প্রায় ৬-৭ লক্ষ সর্পদংশনের ঘটনা ঘটে এবং এর ফলে প্রায় ৬০০০ এর মত মানুষ মারা যান। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি পৃথিবীর বহু দেশের মত আমাদের দেশেও এই গুরুত্বপূর্ণ জনস্বাস্থ্য সমস্যা এতদিন যথাযথ গুরুত্ব পায়নি। 

 

বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রজাতির সাপ

 

বাংলাদেশে প্রায় ৮০ প্রজাতির সাপ রয়েছে যার মধ্যে ৬ ধরনের বিষধর সাপ চিকিৎসার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ-১. গোখরা বা কোবরা (Cobra)

২. পদ্ম গোখরা বা রাজ গোখরা বা কিং কোবরা (King cobra)

৩. শঙ্খিনী বা ব্যান্ডেড ক্রেইট, কেউটে বা Common Krait (B. caeruleus), কাল কেউটে বা কাল নাইজার, হানক বা ওয়ালস্ ক্রেইট।

৪. চন্দ্রবোড়া বা রাসেলস ভাইপার (Russel’s viper)

৫.সবুজ সাপ বা গ্রিন স্নেক (Green snake)

৬. সামুদ্রিক সাপ বা সী স্নেক (Sea snake)

 

বাংলাদেশের বিষাক্ত সাপগুলোর মধ্যে কোবরা/গোখরা এবং ক্রেইট/কেউটে এর বিষ প্রধানত স্নায়ু অবশকারী। এর ফলে- আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে মাংশপেশীর দুর্বলতা দেখা দেয়, চোখের পাতা খুলে রাখতে না পারা, কথা জড়িয়ে যাওয়া, ঢোঁক গিলতে না পারা, মুখ থেকে লালা পড়া, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসা, হাত-পা এর শক্তি কমে আসা, ক্রমে ক্রমে শ্বাসকষ্ট হওয়া। এই সমস্ত রোগী সাধারণত শ্বাসক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। এছাড়া গোখরার দংশনে আক্রান্ত স্থানে ক্ষত ও পচন হতে পারে এবং কিছু কিছু কেউটে (কাল কেউটে) মাংশপেশীর উপর বিষক্রিয়া করে পরোক্ষভাবে কিডনি বিকল করতে পারে। এই ধরনের সাপ প্রায় সারাদেশেই পাওয়া যায়।(চলবে)

 

লেখক: অধ্যাপক ডা. অনিরুদ্ধ ঘোষ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক হিসাবে কর্মরত। তিনি সর্প দংশন, বিষক্রিয়া এবং সংক্রামক রোগ সর্ম্পকিত বিভিন্ন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গবেষণায় যুক্ত। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে স্থাপিত দেশের প্রথম Venom Research Centre-এর প্রধান গবেষক হিসাবে কাজ করছেন। তার বহু গবেষণা প্রবন্ধ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন জার্নালে এবং পাঠ্যপুস্তকে প্রকাশিত হয়েছে।